MODEL ACTIVITY TASK
2020
মডেল অ্যাকটিভিটি টাস্ক
GEOGRAPHY
(পরিবেশ ও ভূগোল)
CLASS-9, PART-2
প্রশ্নপত্র ঃ
সমাধান ঃ
Model Activity Task class 9 Geography Part-2 2020 Answers
১। কীভাবে কোরিওলিস প্রভাব বায়ুপ্রবাহ ও সমুদ্রস্রোতকে প্রভাবিত করে ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ পৃথিবীর আবর্তনের ফলে কোরিওলিস শক্তির সৃষ্টি হয়।
কোরিওলিস শক্তি: পৃথিবীর আবর্তনের ফলে প্রবাহিত বায়ুর ওপর যে শক্তি কাজ করে তাকে কোরিওলিস বল বা শক্তি (Coriolis Effect) বলে। 1835 সালেে ফরাসি বিজ্ঞানী G. De. Coriolis এই শক্তির কথা প্রথম উল্লেখ করেন বলেই এই শক্তির নামকরণ হয় কোরিওলিস শক্তি। কোরিওলিস বলের প্রভাবে বায়ু প্রবাহ ও সমুদ্র স্রোতের দিক পরিবর্তিত হয়।
কোরিওলিস বল বা শক্তির পরিমাণ নির্ভর করে – (i) কোন স্থানের অক্ষাংশীয় অবস্থান (ii) সেই স্থানের বায়ুর গতিবেগ এবং (iii) ওই স্থানের কৌণিক গতিবেগ এর ওপর। কোরিওলিস বলের প্রভাব নিরক্ষরেখায় শূন্য ও মেরুতে সর্বাধিক হয়।
বায়ু প্রবাহের উপর প্রভাব :
পৃথিবীর আবর্তন বায়ুপ্রবাহের একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রক।
- পৃথিবীর আবর্তনের ফলে সৃষ্ট কোরিওলিস বলের প্রভাবে বায়ু প্রবাহের দিক পরিবর্তন হয়।
- বায়ুর গতি দিকের সাথে এটি সমকোনে কাজ করে বলে বায়ুর দিক বিক্ষেপ ঘটে।
- কোরিওলিস বলের কারণে বায়ু উচ্চচাপ থেকে নিম্নচাপের দিকে সোজাসুজি প্রবাহিত না হয়ে উত্তর গোলার্ধে ডান দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে যায় একে ফেরেলের সূত্র বলে।
সমুদ্র স্রোতের উপর প্রভাব :
পৃথিবীর আবর্তন এর জন্য বায়ুর মত সমুদ্র স্রোতেরও গতি বিক্ষেপ ঘটে।
- ফেরেলের সূত্র অনুযায়ী উত্তর গোলার্ধে ডান দিকে ও দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে যায়।
২। কী কী কাজে GPS ব্যবহৃত হয় ?
উত্তর: GPS কথাটির সম্পূর্ণ রূপ হল – Global Positioning System. এটি মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত স্যাটেলাইট নির্ভর একটি radio navigation সিস্টেম। GPS প্রকৃতপক্ষে সেনাবাহিনীর ব্যবহারের উদ্দেশ্যে উদ্ভাবিত হলেও 1980 সালে মার্কিন সরকার তা জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়। GPS ব্যবহারের জন্য কোন নির্ধারিত চার্জ বা setup চার্জ দিতে হয় না।
প্রকৃতপক্ষে, জিপিএস হলো একটি কৃত্রিম উপগ্রহ ভিত্তিক যোগাযোগ ব্যবস্থা যার সাহায্যে যেকোনো আবহাওয়াতে পৃথিবীর যে কোনো স্থানের অবস্থান জানা যায়। এই পদ্ধতির নির্ভুলতা / যথার্থতা (accuracy) 30 মিটার এর মধ্যে সীমাবদ্ধ, যা বর্তমানে প্রাপ্ত যেকোনো radio navigation পদ্ধতির মতো বা তার থেকেও ভালো।
ব্যবহার:
- অবস্থান নির্ণয় : GPS এর সাহায্যে পৃথিবীর যে কোনো স্থানের অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ সহ নিখুঁতভাবে অবস্থান নির্ণয় করা যায়।
- দিক নির্ণয় : GPS এর সাহায্যে স্থলভাগ এ এবং সমুদ্রে জাহাজের নাবিকরা সহজে দিক নির্দেশ করতে পারে।
- মানচিত্র তৈরি : বিভিন্ন প্রকার মানচিত্র তৈরিতে GPS ব্যবহার করা হয়। আন্তর্জাতিক স্তরে বিভিন্ন দেশের, মহাদেশের সীমানা নির্ধারণে জিপিএস ব্যবহৃত হয়।
- আবহাওয়ার পূর্বাভাস : GPS এর সাহায্যে কোন স্থানের আবহাওয়ার তথ্য সংগ্রহ করে, বিশ্লেষণ করে দ্রুত আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া যায়।
- বনসম্পদ ব্যবস্থাপনা : কোন বনাঞ্চলের ম্যাপ তৈরি, নির্দিষ্ট কোনো স্থানের অবস্থান নির্বাচন, সীমানা নির্ধারণে GPS এর সাহায্য নেওয়া হয়।
- পরিবহন ব্যবস্থা : পরিবহন ব্যবস্থাকে সুগম রাখতে, রাস্তাঘাট চিহ্নিত করতে, গন্তব্য স্থানের দূরত্ব নির্ধারণে, সঠিক পথ নির্বাচনে GPS ব্যবহার করা হয়।
এছাড়াও, ভূমি ব্যবহার সংক্রান্ত সমীক্ষার কাজে, সমুদ্র তলদেশের মানচিত্র তৈরিতে, পরিবেশ সংক্রান্ত সমীক্ষায়, নগর পরিকল্পনা, সমুদ্রের মাছের সঠিক অবস্থান নির্ণয় করতে GPS ব্যবহৃত হয়।
Model Activity Task class 9 Geography Part-2 2020
৩। পৃথিবী নিজের অক্ষের চারিদিকে আবর্তিত না হলে কী ঘটনা ঘটবে?
উত্তর : পৃথিবী নিজের অক্ষের চারিদিকে আবর্তিত না হলে যে সমস্ত ঘটনাবলি ঘটার সম্ভাবনা আছে সেগুলি হল নিম্নরূপ –
- দিন-রাত্রির সংঘটন বন্ধ হবে – পৃথিবীর আবর্তন বন্ধ হয়ে গেলে পৃথিবীতে আর দিন রাত্রি সংঘটিত হবে না। পৃথিবীর আলোর দিকটায় চিরদিন দিন থাকবে আর অন্ধকার দিকটায় চিরকাল রাত হয়ে থাকবে। সুতরাং, দিনের দিকটা অনবরত তাপে উত্তপ্ত হবে এবং রাতের দিকটা তাপ এর অভাবে ঠান্ডায় বরফে পরিণত হবে।
- পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র ধ্বংস হয়ে যাবে – পৃথিবী স্থির হয়ে যাওয়ার কারণে পৃথিবীর কেন্দ্রে চৌম্বক ক্ষেত্র নষ্ট হয়ে যাবে।
- ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগের সব কিছু পূর্ব দিকে ধাবিত হবে – চলন্ত বাস হঠাৎ থেমে গেলে যেরকম সবাই সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে, সেই রকম আজ পৃথিবী হঠাৎ স্থির হয়ে গেলে ভূপৃষ্ঠে থাকা সমস্ত কিছু পূর্ব দিকে উড়ে যাবে প্রবল গতিতে (প্রায় 1600 কিমি./ ঘণ্টা)।
- প্রচন্ড শক্তিশালী বায়ুপ্রবাহের সৃষ্টি হবে – পৃথিবীর আবর্তন হঠাৎ থেমে গেলে বায়ুমন্ডলে ঝড়, বজ্রপাত সহ প্রচন্ড শক্তিশালী বায়ুপ্রবাহের সৃষ্টি হবে।
- বায়ুমণ্ডল ও ওজোন স্তর ধ্বংস হবে – পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র ধ্বংস হওয়ার জন্য বায়ুমণ্ডল ও ওজোন স্তর ধ্বংস হবে। ওজোন স্তর সূর্যের তেজস্ক্রিয় রশ্মি থেকে পৃথিবী কে বাঁচিয়ে রাখে বলে এই স্তর ধ্বংস হওয়ার কারণে ভূপৃষ্ঠ উত্তপ্ত হয়ে পুড়তে থাকবে।
- সমুদ্রের ঢেউ বা সুনামির সৃষ্টি হবে – পৃথিবীর আবর্তন গতি স্থির হলে সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাস ঘটবে।
- পৃথিবীতে জীবের অস্তিত্ব থাকবে না – পৃথিবীতে প্রাণের কোন অস্তিত্ব আর থাকবে না।
এছাড়াও, জোয়ার -ভাটা আর না হওয়া, চারিদিকে অগ্নুৎপাত এর পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে।
৪। বর্তমানে অচিরাচরিত শক্তি প্রসার লাভ করছে কেন?
উত্তর : প্রচলিত শক্তির বাইরে যে সকল শক্তির ব্যবহার খুব কম তাকে অচিরাচরিত শক্তি বা অপ্রচলিত শক্তি বলে।
উৎস : অচিরাচরিত শক্তির প্রধান উৎস গুলি হল সৌরশক্তি, জোয়ার ভাটা শক্তি, সমুদ্র তরঙ্গ শক্তি, সমুদ্র জলের উষ্ণতার তারতম্য, বায়ু শক্তি, ভূতাপ শক্তি, বর্জ্যপদার্থ থেকে জৈব গ্যাস ইত্যাদি।
অচিরাচরিত শক্তির প্রসার লাভের কারণ:
অফুরন্ত সম্পদ : অচিরাচরিত শক্তির উৎস গুলি অফুরন্ত বা পুনর্ভব সম্পদ। এগুলোর ব্যবহারের দিন শেষ হবে না। ভবিষ্যতে এই শক্তি ফুরিয়ে যাবার সম্ভাবনা নেই।
পরিবেশবান্ধব সম্পদ : অচিরাচরিত শক্তির উৎস গুলি থেকে শক্তির আহরণে পরিবেশ কখনোই দূষিত হয় না।
খরচ কম : অচিরাচরিত শক্তির উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ কম লাগে।যেমন কম খরচে ছোট ছোট বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্যুতের যোগান দেওয়া যায়।
নিরাপদ ব্যবহার : অচিরাচরিত শক্তির ব্যবহার প্রচলিত শক্তির তুলনায় সহজ ও নিরাপদ।
স্বল্প মূলধন : স্বল্প মূলধন এ অচিরাচরিত শক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব।
ভারতে অচিরাচরিত শক্তি উন্নয়নের জন্য 1982 সালে গঠন করা হয় Department of Non-Conventional Energy Resources (DNES)। 1987 সালে গঠন করা হয় Indian Renewable Energy Development Agency (IREDA)। 1992 সালে DNES সংস্থাটিকে “অচিরাচরিত শক্তি মন্ত্রণালয়” এ ( The Ministry of Non-Conventional Energy Resources – MNES) উন্নত করা হয়।
Model Activity Task class 9 Geography Part-2 2020